স্টিলথ যুদ্ধবিমানে হামলা, পাল্টাঘাতের ভয়াবহতায় উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক 
প্রকাশঃ ১৪ জুন ২০২৫


মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধের আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হচ্ছে। দীর্ঘ এক বছরের প্রস্তুতির পর অবশেষে সরাসরি ইরানের উপর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। পাল্টা জবাবে ইরানও একের পর এক সামরিক প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। গত কয়েকদিনে ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে নিহত হয়েছেন বহু মানুষ, ধ্বংস হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো। পরিস্থিতি এখন পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে।

ইসরায়েলের স্টিলথ আক্রমণ

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা যায়, ইসরায়েল প্রথম হামলায় ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র-নির্মিত F-35 স্টিলথ জেট, হার্মিস-৯০০ ড্রোন, এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। লক্ষ্য ছিল ইরানের সামরিক ঘাঁটি, পারমাণবিক স্থাপনা এবং যোগাযোগ কেন্দ্র।

পাল্টা জবাবে ইরান

ইরান পাল্টা প্রতিরোধে তাদের মাল্টিলেয়ার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সক্রিয় করেছে। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি বাভার-৩৭৩, খোরদাদ-১৫, এবং রাশিয়া-নির্মিত এস-৩০০ সিস্টেম দিয়ে আকাশ প্রতিরক্ষা জোরদার করা হয়েছে। তেহরানের দাবি, এই ডিফেন্স সিস্টেমের সাহায্যে তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলের ২৮টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে, যার মধ্যে রয়েছে বহু প্রতীক্ষিত স্টিলথ F-35 জেট।

ইরানের প্রেস টিভি জানায়, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাব্রিজ, কেরমানশাহ এবং বন্দর আব্বাস অঞ্চলে গুলি করে নামানো হয়েছে একাধিক ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান। এই দাবির সত্যতা নিরূপণে এখনো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর তদন্ত চলছে।

ধরা পড়েছে গুপ্তচর ড্রোন

সর্বশেষ, ইরানের ইসফাহান প্রদেশে গোপনে প্রবেশ করা হার্মিস-৯০০ কোজাপ ড্রোন ধরা পড়ে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার। ইরান দাবি করছে, ড্রোনটি গুপ্তচরবৃত্তির উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেছিল, কিন্তু ইরানের উন্নত রাডার ও সিগন্যাল ট্রায়াঙ্গুলেশন প্রযুক্তি একে শনাক্ত করে ফেলে।

এই মডেলটি আগে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত সংঘর্ষেও ব্যবহৃত হয়েছে। তবে ইরান বলছে, তাদের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির কাছে ড্রোনটি কার্যকারিতা হারিয়েছে।

বিতর্কিত দাবিতে মুখোমুখি দুই পক্ষ

ইরান আরও জানিয়েছে, ধ্বংস হওয়া কয়েকটি বিমানের পাইলটদের মধ্যে দুজন এখন ইরানের হেফাজতে রয়েছে। তবে ইসরায়েল এই দাবিকে পুরোপুরি অস্বীকার করে এটিকে "তেহরানের প্রপাগান্ডা" বলেই উড়িয়ে দিয়েছে। তারা শুধুমাত্র ড্রোন ধ্বংসের সত্যতা স্বীকার করেছে।

আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়ছে

ইসরায়েল-ইরানের এই পাল্টাপাল্টি আক্রমণে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়াসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে। জাতিসংঘে শান্তির আহ্বান জানানো হলেও মাটিতে যুদ্ধের আগুন যেন থামার নাম নিচ্ছে না।

সম্ভাব্য পরিণতি

এই সংঘাত ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছে সরাসরি সামরিক যুদ্ধে। দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব একে অপরকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিস্থিতি যদি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না আসে, তবে পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়েই বড় পরিসরের যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা অতি বাস্তব।

Previous Post Next Post