বর্তমান সময়ে নারীর অধিকারের নামে কিছু কর্মকাণ্ড আমাদের সমাজে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। যারা সত্যিকার অর্থে ইসলামের আলোকে নারীকে তার প্রাপ্য সম্মান ও অধিকার দিতে চান, তারা আজ হতাশ। একজন সচেতন নাগরিক ও সাংবাদিক হিসেবে আমি আমার অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণ তুলে ধরতে চাই।
আমার মা তার বাবার বাড়ির সম্পত্তিতে অংশ পেয়েছেন, আমার বোনেরাও বাবার সম্পত্তিতে তাদের নির্ধারিত অংশ পেয়েছেন। এ অধিকার ইসলাম তাদের দিয়েছে। ইসলামে নারীর সম্পত্তির অধিকার সুস্পষ্টভাবে নির্ধারিত আছে, এবং তা বাস্তবেও বহু মুসলিম পরিবারে প্রয়োগ হচ্ছে।
আমার এক বোন বর্তমানে আমেরিকায় চাকরি করছেন। তিনি পূর্ণ পর্দা—বোরকা ও হিজাব পরিধান করে কর্মক্ষেত্রে যান। সেখানে তাঁর কোনো বাধা সৃষ্টি হয়নি। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলেও একজন নারী আত্মনির্ভর হতে পারেন।
কিন্তু সমাজের কিছু দুর্ভাগ্যজনক ক্ষেত্র আছে, যেখানে নারী তাদের প্রাপ্য সম্মান ও অধিকার থেকে বঞ্চিত। যৌন পেশায় নিযুক্ত নারীদের জীবন যেমন কঠিন, তেমনি তাদের সামাজিক স্বীকৃতি ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত জটিলতাও গভীর। এদের জন্য আমাদের সহানুভূতি ও গঠনমূলক পুনর্বাসন দরকার, ঘৃণা বা বিদ্বেষ নয়।
ইদানীং কিছু সংগঠন বা ব্যক্তি এমন দাবি নিয়ে রাস্তায় নামছেন, যা ইসলামের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনার সাথে সাংঘর্ষিক। অনেক সময় তারা এমন স্লোগান বহন করেন, যা সাধারণ নারীদেরও অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ নারী ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাসী এবং তারা তাদের ধর্মীয় অধিকারেই সন্তুষ্ট।
আমি সবাইকে অনুরোধ করব—কোনোভাবেই উত্তেজনায় ভেসে গিয়ে বাড়াবাড়ি বা সহিংসতায় জড়াবেন না। আমাদের দেশ একটি উদার রাষ্ট্র, এখানে সকল নাগরিক শান্তিপূর্ণভাবে মতপ্রকাশের অধিকার রাখে। তবে তা যেন শালীনতা ও নৈতিকতার সীমার মধ্যে থাকে।
আমাদের করণীয় হলো—নারী অধিকার নিয়ে সত্যিকারের আলোচনা ও সমস্যা সমাধানের পথ খোঁজা। ইসলাম নারীকে যে সম্মান দিয়েছে, তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করলেই সমাজে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে।
লেখক: ইলিয়াস হোসাইন (সাংবাদিক)
