রূপরেখা প্রতিবেদন
প্রকাশঃ ০১ জুন ২০২৫
চট্টগ্রাম নগরীতে দেশের প্রথম মনোরেল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ওরাসকম কনস্ট্রাকশন ও আরব কন্ট্রাক্টরস গ্রুপের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
📌 প্রকল্পের মূল তথ্য
- দৈর্ঘ্য: প্রস্তাবিত মনোরেল প্রকল্পটির মোট দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৫৪ কিলোমিটার।
- স্টেশন সংখ্যা: ৩২ থেকে ৩৩টি স্টেশন থাকবে।
- সময়সীমা: মনোরেলে করে পুরো শহর ঘুরতে সময় লাগবে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট।
- বিনিয়োগ: প্রকল্পে বিনিয়োগ হবে প্রায় ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা।
- অর্থায়ন: পুরো অর্থায়ন করবে বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ওরাসকম কনস্ট্রাকশন ও আরব কন্ট্রাক্টরস। চসিকের কোনো আর্থিক দায় থাকবে না; তারা কেবল প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট ও ভূমি বরাদ্দ দেবে।
🛤️ প্রস্তাবিত রুটসমূহ
- লাইন-১: কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত (বহদ্দারহাট, চকবাজার, লালখান বাজার, দেওয়ানহাট ও পতেঙ্গা হয়ে)।
- লাইন-২: সিটি গেট থেকে শহীদ বশিরুজ্জামান স্কয়ার (একে খান, নিমতলী, সদরঘাট ও ফিরিঙ্গি বাজার হয়ে)।
- লাইন-৩: অক্সিজেন থেকে ফিরিঙ্গি বাজার (মুরাদপুর, পাঁচলাইশ, আন্দরকিল্লা ও কোতোয়ালি হয়ে)।
🌍 পরিবেশ ও অর্থনৈতিক প্রভাব
মনোরেল একটি আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন রেল ব্যবস্থা, যা মেট্রোরেলের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ খরচ সাশ্রয়ী। এটি কম জায়গায় স্থাপন করা সম্ভব, ফলে ঘনবসতিপূর্ণ শহর বা স্থাপনার মধ্য দিয়েও সহজে চলাচল করতে পারে। মনোরেলের যাত্রী ধারণক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম হলেও এটি দ্রুত নির্মাণযোগ্য এবং শহরের যানজট কমাতে কার্যকর। বর্তমানে জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া ও ভারতের কিছু শহরে মনোরেল সফলভাবে চালু রয়েছে।
🏙️ চট্টগ্রামের ভবিষ্যৎ
চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামকে দক্ষিণ এশিয়ার গেটওয়ে হিসেবে গড়ে তোলা হবে। মনোরেল শুধু যানজট নিরসনে নয়, বরং চট্টগ্রামকে একটি পরিবেশবান্ধব, পর্যটন ও ব্যবসাবান্ধব নগরীতে রূপান্তরের দিকেও এগিয়ে নেবে। এটি দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে সংযোগের একটি আধুনিক সেতুবন্ধন তৈরি করবে।
এই মনোরেল প্রকল্পটি চট্টগ্রামের পরিবহন খাতে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি নগরীর যানজট নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে এবং নগরবাসীর যাতায়াতকে আরও সহজ ও আরামদায়ক করবে।
