বাংলাদেশের ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের বাজেট প্রকাশ

 দৈনিক রূপরেখা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৫


বাংলাদেশের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আজ, ২ জুন ২০২৫, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ টেলিভিশনের মাধ্যমে ঘোষণা করেছেন। এই বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি সাম্প্রতিক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাসের দৃষ্টান্ত। 

🔑 বাজেটের মূল দিকনির্দেশনা

  • বাজেটের আকার: ৭,৯০,০০০ কোটি টাকা
  • উন্নয়ন ব্যয় (ADP): ২,৩০,০০০ কোটি টাকা (পূর্ববর্তী ২,৬৫,০০০ কোটি টাকা থেকে হ্রাস)
  • অ-উন্নয়ন ব্যয়: ৫,৬০,০০০ কোটি টাকা (পূর্ববর্তী ৫,৩২,০০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি)
  • রাজস্ব ঘাটতি: ২,২৬,০০০ কোটি টাকা (GDP-এর ৩.৬২%)
  • জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা: ৫.৫%
  • মুদ্রাস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা: ৭%

💸 রাজস্ব সংগ্রহ ও করনীতি

  • জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) লক্ষ্যমাত্রা: ৫,১৮,০০০ কোটি টাকা
  • নতুন কর ব্যবস্থা: ভ্যাট ও শুল্কের আওতা বৃদ্ধি, কর অব্যাহতি হ্রাস এবং কর প্রশাসন ও নীতির পৃথকীকরণ।
  • আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF): রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৫,৮০,০০০ কোটি টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করেছে। 

🏦 ঋণ পরিশোধ ও ব্যাংক খাত সংস্কার

  • ঋণ পরিশোধ ব্যয়: ১,৩৩,০০০ কোটি টাকা, যা বাজেটের ১৬.৮%
  • ব্যাংক খাত সংস্কার: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণে বিশেষ বরাদ্দ; IMF ও ADB-এর সহায়তা প্রত্যাশিত। 

🛡️ সামাজিক নিরাপত্তা ও ভর্তুকি

  • সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি: উপকারভোগীর সংখ্যা ও ভাতা বৃদ্ধি; বরাদ্দ ১০,০০০ কোটি টাকা বৃদ্ধি।
  • খাদ্য ভর্তুকি: উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে ২,৫০০ কোটি টাকা বৃদ্ধি। 

🌱 অগ্রাধিকার খাত

  • খাতসমূহ: কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা।
  • উন্নয়ন প্রকল্প: সবুজ ও জলবায়ু-সহনশীল প্রকল্পে বিশেষ গুরুত্ব। 

🏛️ বাজেট উপস্থাপন

দেশে নির্বাচিত সরকার না থাকায়, বাজেটটি সংসদে উপস্থাপন না করে টেলিভিশনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এই বাজেটকে বাস্তবসম্মত ও বাস্তবায়নযোগ্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা সামাজিক বৈষম্য হ্রাস ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে। 

📊 বিশ্লেষণ

এই বাজেটটি একটি সংকোচনমূলক বাজেট, যা রাজস্ব ঘাটতি ও ঋণ পরিশোধের চাপ মোকাবিলায় ব্যয় হ্রাসের মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনের লক্ষ্যে প্রণীত হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা ও ব্যাংক খাত সংস্কারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে, রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যকর বাস্তবায়ন এই বাজেটের সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে। 

Previous Post Next Post