আহমেদাবাদে উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পর বিধ্বস্ত এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট, নিহত বহু

 রূপরেখা নিউজ ডেস্ক | ১২ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার

সংগৃহীত ছবি

আজ দুপুরে ভারতের আহমেদাবাদে ভয়াবহ এক বিমান দুর্ঘটনায় অন্তত ২৪২ জন আরোহীর জীবন হুমকির মুখে পড়ে। আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI 171, বোয়িং ৭৮৭–৮ ড্রিমলাইনার, উড্ডয়নের কিছু সময় পরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শহরের আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়।

বিমানটি দুপুর আনুমানিক ১টা ৩৮ মিনিটে উড্ডয়ন শুরু করে। উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মাথায় এটিসিতে বিপদের সংকেত পাঠায় পাইলট। তখন বিমানটি মাত্র ৬০০ ফুটের মতো উচ্চতায় ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানটি আহমেদাবাদের মেঘানীনগর এলাকায় একটি ভবনের পাশের ফাঁকা জায়গায় আছড়ে পড়ে। মুহূর্তেই আগুন ধরে যায় পুরো বিমানে।

দুর্ঘটনার সময় বিমানে মোট ২৪২ জন ছিলেন, যার মধ্যে ২৩২ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রু সদস্য। যাত্রীদের মধ্যে ভারত, যুক্তরাজ্য, পর্তুগাল ও কানাডার নাগরিকও ছিলেন। স্থানীয় সময় অনুসারে, যাত্রার সময় আহমেদাবাদে আবহাওয়া স্বাভাবিক ছিল।

ঘটনার পরপরই উদ্ধারকাজে নামে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ), দমকল বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন। ঘটনাস্থলে পাঠানো হয় সাতটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট ও বহু অ্যাম্বুলেন্স। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে পুরো এলাকা। স্থানীয়রা আতঙ্কে ঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন। ভবনের কিছু অংশেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিমানটি নিচে নেমে আসার সময় বেশ কয়েকটি অংশ মাঝ আকাশেই ছিটকে পড়ে। এর মধ্যে একটি বড় টুকরো একটি বহুতল ভবনের ছাদে আঘাত হানে। দুর্ঘটনায় অনেকেই নিহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তবে এখনো সরকারিভাবে সুনির্দিষ্ট মৃত্যুর সংখ্যা জানানো হয়নি।

এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে বোয়িং, ডিজিসিএ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় কাজ চলছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, যান্ত্রিক ত্রুটি বা ওভারলোডিং সংক্রান্ত কোনো সমস্যা থেকে দুর্ঘটনাটি ঘটতে পারে। তবে বিস্তারিত তদন্তের পরই প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

ঘটনাটি ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ একটি দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। আহমেদাবাদ বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে এবং সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

এটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার মডেলের প্রথম বড় ধরণের দুর্ঘটনা, যা আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলোর মধ্যেও ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

Previous Post Next Post